নিজস্ব প্রতিবেদক ::
কক্সবাজারের সুগন্ধা পয়েন্টস্থ বায়তুল মামুর জামে মসজিদের প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা আত্মসাতের প্রতিবাদ ও সংবাদ প্রকাশ করায় তিন সাংবাদিকসহ ১২ জন সাধারণ মুসল্লীদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ০৬ জুন সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি রুজু করেন টাকা মসজিদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহসনি শেখ নামে এক ব্যক্তি। এদিকে সাংবাদিক ও সাধারণ মুসল্লীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠেছে কক্সবাজারের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সাংবাদিক সমাজ। মামলার বিষয়টি জানাজানি হলেও অনেকেই তাৎক্ষণিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাসের মাধ্যমে তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন। সেই সাথে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে সর্বত্র।
জানা যায়, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টস্থ বায়তুল মামুর জামে মসজিদের প্রায় ৪০ লাখ টাকা আত্মসাত পরিচালনা কমিটির কয়েকজন ব্যক্তি। এ ঘটনা জানাজানি হলে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পবিত্র মসজিদের টাকা আত্মসাতের প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠেছে সাধারণ মুসল্লী ও ব্যবসায়ীরা। যার অংশ হিসেবে আত্মসাতকৃত টাকা ফিরিয়ে দিতে শুক্রবার (২৭ মে) বাদে জুমা মসজিদের সামনে সাধারণ মুসল্লী ও ব্যবসায়ীরা মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে।
এতে মুসল্লীরা জানিয়েছেন, মসজিদ কমিটির সাবেক সহ—সভাপতি লাল মিয়া, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহসিন শেখ, সাবেক ক্যাশিয়ার মহিউদ্দিন, সাবেক সদস্য নাজিম দীর্ঘ ৬ বছর মসজিদের দায়িত্ব পালন করে। দায়িত্ব পালনকালে পরস্পর যোগসাজশে সভাপতির চোখ ফাঁকি দিয়ে মসজিদের প্রায় ৪০ লাখ টাকা লোপাট করে। এছাড়া মসজিদের অজু খানা ভেঙ্গে দোকান দেওয়ার কথা বলে জনৈক ব্যক্তির কাছ থেকে ৩ লক্ষ টাকা ব্যক্তিগত জামানত নিয়ে ১০ হাজার টাকায় ভাড়া দিয়ে দেয়। একইভাবে আরেক ব্যক্তিকে দোকান দেওয়ার কথা বলে ৩ লক্ষ টাকা জামানত নেয়। এসব বিষয় মসজিদের সভাপতি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করলে তিনি টাকা আত্মসাৎ, অনিয়ম ও দুনীর্তি হয়েছে জানতে পেরে অজুখানা ভেঙ্গে দোকান নির্মাণ না করতে নির্দেশ দেন। সেই সাথে ওই ব্যক্তিদের দ্বারা পরিচালিত মসজিদ কমিটি ভেঙ্গে দেয়। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ৬ বছর দায়িত্ব পালনকালে মসজিদের যাবতীয় আয়—ব্যয় হিসাব চেয়ে আত্মসাৎকৃত টাকা মসজিদ ফান্ডে ফিরিয়ে আনার দাবিতে দুদক, জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে সাধারণ মুসল্লীরা।
এদিকে সাধারণ মুসল্লীদের মানববন্ধন, প্রতিবাদ সমাবেশে ও দুদক—ডিসি বরাবর দেওয়া অভিযোগের আলোকে জাতীয় এবং স্থানীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযুক্তরা সিন্ডিকেট করে সাংবাদিক সংসদ কক্সবাজারের সভাপতি এম.এ আজিজ রাসেল, রিপোর্টার্স ইউনিটি কক্সবাজারের সদস্য বোরহান উদ্দিন রব্বানী, দৈনিক আশ্রয় প্রতিদিনের কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি মো. হোসেন সুমনসহ মসজিদের সাধারণ মুসল্লী দানু, রুবেল, জালাল আহমদ, জাকের হোসেন, শফিউল আলম কাজল, ফরিদ আলম, মোহাম্মদ সেলিম ও জামাল হোসেনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়। যা মসজিদের টাকা আত্মসাত করা টাকা হজম করার অন্যতম অকৌশল বলে জানান সুশীল মহল।
পাঠকের মতামত: